ট্রান্সজিস্টর (ইংরেজি: Transistor) হলো আধুনিক ইলেকট্রনিক্স এবং কম্পিউটার প্রযুক্তির একটি মৌলিক উপাদান। এটি একটি সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস যা বিদ্যুতের সংকেতকে নিয়ন্ত্রণ, পরিবর্ধন, এবং সুইচিং করতে ব্যবহৃত হয়। ট্রান্সজিস্টরের উদ্ভাবন কম্পিউটারের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, কারণ এটি ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে কম্পিউটারের আকার এবং খরচ কমিয়ে এবং ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
ট্রান্সজিস্টরের ইতিহাস:
- উদ্ভাবন: ১৯৪৭ সালে, জন বারডিন (John Bardeen), ওয়াল্টার ব্র্যাটেইন (Walter Brattain), এবং উইলিয়াম শকলে (William Shockley) বেল ল্যাবরেটরিজে প্রথম ট্রান্সজিস্টর তৈরি করেন।
- এটি ভ্যাকুয়াম টিউবের বিকল্প হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল এবং এটি কম শক্তি, কম জায়গা এবং উচ্চ কার্যকারিতার কারণে বিপ্লবী প্রভাব ফেলে।
- ১৯৫৬ সালে, ট্রান্সজিস্টরের উদ্ভাবনের জন্য বারডিন, ব্র্যাটেইন, এবং শকলে নোবেল পুরস্কার পান।
ট্রান্সজিস্টরের গঠন:
- ট্রান্সজিস্টর একটি সেমিকন্ডাক্টর পদার্থ (সাধারণত সিলিকন বা জার্মেনিয়াম) দিয়ে তৈরি, যা তিনটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত:
- বেস (Base): সংকেত প্রবেশ করার জায়গা।
- এমিটার (Emitter): যেখানে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়।
- কলেক্টর (Collector): যেখানে বিদ্যুৎ প্রবাহ বের হয়।
- সেমিকন্ডাক্টর পদার্থের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে ট্রান্সজিস্টর সংকেত পরিবর্ধন এবং সুইচিং করতে সক্ষম হয়।
ট্রান্সজিস্টরের প্রকারভেদ:
- বিপোলার জংশন ট্রান্সজিস্টর (BJT):
- এটি দুই ধরনের হয়: NPN এবং PNP।
- BJT সংকেত পরিবর্ধন এবং সুইচিং উভয়ের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এটি একটি সাধারণ ট্রান্সজিস্টর প্রকার।
- ফিল্ড ইফেক্ট ট্রান্সজিস্টর (FET):
- FET একটি একক চার্জ ক্যারিয়ারের মাধ্যমে কাজ করে এবং এতে দুটি প্রধান ধরন রয়েছে: MOSFET এবং JFET।
- MOSFET (Metal-Oxide-Semiconductor Field-Effect Transistor) ডিজিটাল এবং এনালগ সার্কিট উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়, বিশেষত ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (IC) তৈরিতে।
ট্রান্সজিস্টরের ব্যবহার:
- বিদ্যুৎ পরিবর্ধন: ট্রান্সজিস্টর সংকেতকে শক্তিশালী করে, যা রেডিও, টেলিভিশন, এবং অডিও সিস্টেমের মতো যন্ত্রে ব্যবহৃত হয়।
- সুইচিং: এটি সুইচ হিসেবে কাজ করে, যা ডিজিটাল সার্কিট এবং কম্পিউটারের প্রসেসরের মতো যন্ত্রে দ্রুত সুইচিং করতে সহায়তা করে।
- মেমোরি এবং প্রসেসিং ইউনিট: ট্রান্সজিস্টর ব্যবহার করে আধুনিক কম্পিউটারের মাইক্রোপ্রসেসর এবং মেমোরি চিপ তৈরি করা হয়।
- ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (IC): ট্রান্সজিস্টর ছোট ইলেকট্রনিক চিপে মিনিaturized করা হয় এবং তা দিয়ে মাইক্রোপ্রসেসর, RAM, এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরি করা হয়।
ট্রান্সজিস্টরের গুরুত্ব:
- ছোট আকার এবং কম বিদ্যুৎ খরচ: ট্রান্সজিস্টর ভ্যাকুয়াম টিউবের তুলনায় ছোট এবং কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যা কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিকে আরও ছোট ও শক্তিশালী করতে সহায়ক।
- উচ্চ গতি: ট্রান্সজিস্টর দ্রুত সংকেত প্রক্রিয়াকরণ করতে সক্ষম, যা কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।
- টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী: ট্রান্সজিস্টর ভ্যাকুয়াম টিউবের তুলনায় টেকসই এবং দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে সক্ষম।
ট্রান্সজিস্টরের প্রভাব:
- ট্রান্সজিস্টরের উদ্ভাবন আধুনিক ইলেকট্রনিক্সের জন্য একটি বিপ্লবী পদক্ষেপ ছিল। এটি মাইক্রোপ্রসেসর, মেমোরি চিপ, এবং অন্যান্য আধুনিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরির মূলে রয়েছে।
- ট্রান্সজিস্টরের ছোট আকার এবং কম খরচের কারণে ইলেকট্রনিক্সকে আরও সাশ্রয়ী করে তুলেছে, যা ব্যক্তিগত কম্পিউটার এবং মোবাইল ডিভাইসের ব্যবহারকে বাড়িয়েছে।
- আধুনিক প্রযুক্তি, যেমন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, এবং ট্যাবলেট, সমস্ত ট্রান্সজিস্টরের ভিত্তিতে তৈরি, এবং এর কারণেই আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উপস্থিতি রয়েছে।
ট্রান্সজিস্টর আধুনিক কম্পিউটিং এবং ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তির এক মূর্ত প্রতীক। এটি বৈদ্যুতিক সংকেত নিয়ন্ত্রণ, প্রসেসিং, এবং স্টোরেজে এক বিপ্লব এনে দিয়েছে, যা আজকের প্রযুক্তির ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
Content updated By
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
etches c
electrons
transistors
charges
etches
transistors
charges
electrons
protons
১৯৫১
১৯৪৮
১৯৬৪
কোনোটিই নয়
Transistors are much smaller
Transistors produce low heat
Transistors were less reliable
Transistors were used in radios and other electronic devices
Read more